
বৈদিক সাহিত্যে মা কালীর প্রথম নামোল্লেখ: মুণ্ডক উপনিষদে এই শ্লোকটি পাওয়া যায়।
কালী করালী মনোজবা চ
সুলোহিতা যা চ সুধূম্রবর্ণা
স্ফুলিঙ্গিনী বিশ্বরুচী চ দেবী
লেলায়মানা ইতি সপ্তজিহ্বাঃ।।
এই শ্লোকে অগ্নির সপ্ত জিহ্বার কথা বলা হয়েছে। এই সপ্ত জিহ্বা বলি গ্রহণ করেন। কালীর নামই এই সপ্তজিহ্বার মধ্যে প্রথমে নেওয়া হয়েছে, তার পরেই করালী, যা বস্তুত আমরা কালীর সমার্থক বলেই জানি। এরপর মনোজবা, যা কালীভক্তের কাছে খুব পরিচিত। মায়ের সঙ্গে লাল রঙের সম্পর্ক আছে, শাক্ত ধর্মের রঙ লাল, তাই সুলোহিতা। সুধূম্রবর্ণা, স্ফুলিঙ্গিনী, বিশ্বরুচী – সপ্তজিহ্বার এই বাকি নামগুলিও মায়ের বলিপ্রিয়া এবং অগ্নিপ্রিয়া বৈশিষ্ট্য বহন করে। সর্বশেষে দেবী লেলায়মানা শ্লোকাংশে তো নিঃসন্দেহে দ্যোতনা আছে মা কালীর প্রসারিত জিহ্বার।
আমাদের মা শ্মশানে বিরাজ করেন, আমাদের মা শ্মশানবাসিনী। সেই শ্মশানে সাধনা করেই কালীসাধক সিদ্ধি লাভ করেন, তাই আগুন আমাদের মায়ের প্রতীক। আমাদের মা কালাগ্নি, এবং তাঁর তেজ এমনকি কালকেও কলন করে।
অবৈদিক তন্ত্রাশ্রয়ী হরপ্পা সভ্যতায় বলি গ্রহণ করতেন সপ্তমাতৃকা, এই মর্মে প্রত্ন ফলক পাওয়া গেছে। সেই সুপ্রাচীন প্রথা পরে বৈদিক আর্যদের মধ্যে অগ্নির সপ্ত জিহ্বায় রূপান্তরিত হয়েছে।
© তমাল দাশগুপ্ত Tamal Dasgupta
জয় মা কালী। জয় জয় মা।
মায়ের ছবি পিন্টারেস্ট থেকে।
তমাল দাশগুপ্ত ফেসবুক পেজ, পনেরো ডিসেম্বর দুহাজার বাইশ