চৈত্র নবরাত্রি শুরু হয়েছে – তমাল দাশগুপ্ত

চৈত্র নবরাত্রি শুরু হয়েছে।

তন্ত্রধর্মের মাতৃকা উপাসনায় নবরাত্রি, অর্থাৎ নয় রাতের মাতৃকা ব্রত এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বছরে চারটি নবরাত্রি আসে, এর মধ্যে দুটি গুপ্ত, মাঘ ও আষাঢ় নবরাত্রি। দুটি প্রকাশ্য নবরাত্রি, চৈত্র ও আশ্বিন নবরাত্রি: অর্থাৎ বাসন্তী ও শারদীয়া নবরাত্রি। এই দুই সময়েই দুর্গাপুজো হয়। চৈত্র নবরাত্রি শুরু হয়েছে, বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ শুরু হয়েছে। এই বসন্ত নবরাত্রির ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথিতে বাসন্তী দুর্গাপুজো হবে, অর্থাৎ বাঙালির দুর্গাপুজো মূলত পঞ্চরাত্রি ব্রত হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়, এজন্য আমরা প্রথমা তিথি থেকে দশমী অবধি নবরাত্রির পরিবর্তে ষষ্ঠীর দিন থেকে দশমী তিথি অবধি দুর্গাপুজোর মাধ্যমে মায়ের উপাসনা করি।

এই আসন্ন বাসন্তী দুর্গাপুজোয় প্রায় সবই শারদীয়া দুর্গাপুজোর মত, কেবল ষষ্ঠী তিথিতে বোধন হয় না এবং দশমী তিথিতে বিজয়া হয় না। কিন্তু অষ্টমী ও নবমী তিথির সন্ধিক্ষণে সন্ধিপুজো, যা দুর্গাপুজোর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ও কেন্দ্রীয় অংশ, তা সহ বাকি সমস্ত প্রথাই একরকম।

বর্তমানে উত্তর ভারত জুড়ে নবরাত্রি ব্রত পালন হচ্ছে। আমাদের উপমহাদেশের সুপ্রাচীন মাতৃধর্মের শেকড় যা হরপ্পা সভ্যতা থেকে বিস্তৃত, তার উদযাপন এই নবরাত্রি উৎসব। কিন্তু উত্তর ভারতের এলিট অংশটি বলিপ্রিয়া মায়ের পুজো করেন নিরামিষভাবে, সেটা আদ্যাশক্তির আদি প্রথা নয়। এছাড়া বাসন্তী দুর্গাপুজোর মহানবমী তিথিতে রামনবমী পালনের প্রথাটিও প্রাচীন নয়, এটিও পরবর্তী কালের প্রক্ষেপ।

জয় মা দুর্গা। জয় মা রুধিরপ্রিয়া বলিপ্রিয়া। যেন না ভুলি,সন্ধিপুজোয় স্বয়ং মা চামুণ্ডা কালীর আবির্ভাব ঘটে বলি গ্রহণ করতে দুর্গা মণ্ডপে। দুর্গাপুজো আসলে ভদ্রকালীর উপাসনা, মা দুর্গার প্রণাম মন্ত্রে ভদ্রকালীর আবাহন ও পূজা করি আমরা। মা কালীর দুর্গারূপের জয় হোক।

© তমাল দাশগুপ্ত Tamal Dasgupta

সিংহবাহিনী মা কালীর মূর্তিটি লোটাস স্কাল্পচার থেকে নেওয়া।

জয় জয় মা।

তমাল দাশগুপ্ত ফেসবুক পেজ, বাইশ মার্চ দুহাজার তেইশ

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s