
কালীতত্ত্ব সারাৎসার।
তিনি আমাদের অন্ধকারতম কালরাত্রিকেও আলোকোজ্জ্বল করেন, সেজন্য আমরা কার্তিকী অমাবস্যায় তাঁর উপাসনায় দীপাবলি পালন করি।
তিনি কালের কলন করেন। তাঁর ভয়ে দক্ষিণদিকের অধিপতি যম পালিয়ে যান সেজন্য তিনি দক্ষিণাকালী নামে প্রসিদ্ধ, আর সেজন্য তাঁর ভক্ত মৃত্যুঞ্জয় হন।
তিনি জগতের উৎস, জগদকারণ প্রকৃতি। আবার অন্তিমে তিনিই জগদবিলয়। এ বিশ্বজগতের সৃষ্টি স্থিতি প্রলয় তিনিই। তাঁকে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না, তিনি অব্যক্ত। কিন্তু আমরা ক্ষুদ্র মানববুদ্ধিতে তাঁর এই মূর্তি গড়ে নিয়েছি ধ্যানের সুবিধা হবে বলে।
তাঁর চার হাত চতুর্বর্গ। তাঁর খড়্গ সমস্ত জাগতিক মোহজাল ছিন্ন করে। তিনি বলিপ্রিয়া, তাঁর প্রসারিত জিহ্বা বলি গ্রহণ করার প্রতীক। তিনি দিগবসনা কারণ তিনি দিগদিগন্তে চরাচর জুড়ে ব্যাপ্ত। তাঁর দক্ষিণ পদ ও বাম পদ সাধনার দুই প্রধান মার্গ নির্দেশ করে। তাঁর পদতলের শব শুধুমাত্র তাঁর পাদস্পর্শের জোরে শিবত্ব পায়।
তিনি কেবল তাঁর মন্দিরে ও প্রতিমায় আবদ্ধ নন। তিনি বিশ্বচরাচর জুড়ে ব্যাপ্ত। কিন্তু তাঁর শ্রেষ্ঠতম প্রতিমা আমাদের হৃদয়ে। হৃদি কালিকাদেবতায়ৈ নমঃ।
তিনি মা বলে ডাকলে সাড়া দেন: এক কথায় গূঢ়, গভীর, অনন্ত কালীতত্ত্বের সারমর্ম হল এই।
জয় মা কালী। জয় জয় মা।
© তমাল দাশগুপ্ত Tamal Dasgupta
মায়ের ছবি ইন্টারনেট থেকে।
তমাল দাশগুপ্ত ফেসবুক পেজ, চার মার্চ দুহাজার তেইশ