
হরপ্পা সভ্যতায় একজন রাত্রির দেবীকে প্রদীপ সহযোগে লাল সিঁদুর দিয়ে উপাসনা করা হত। হরপ্পা পরবর্তী কালে ইনিই ঋগ্বেদে নক্ৎ কৃষ্ণী রূপে পূজিত হয়েছেন: আক্ষরিক অর্থে রাত্রির কালো মেয়ে। ইনিই বৈদিকদের অদিতি। ইনিই সর্বপ্রাচীন আদিমাতা। এই নিশা থেকে জগৎ উৎপন্ন, এবং প্রাণসৃষ্টির শুরুতে এঁরই ঊষা হয়ে আবির্ভাব। হরপ্পা সভ্যতায় এই ঊষা এবং নিশা পূজিত হতেন, আজকের দুর্গা ও কালী: এঁরা আমাদের বেদপূর্ব উত্তরাধিকার। আবার বস্তুত ইন্ডো ইউরোপীয় সভ্যতার আদি মাতৃধর্মের উত্তরাধিকারও আমাদের বাঙালিদের এই মাতৃকা উপাসক তন্ত্রেই আছে। এ আমাদের ব্রাত্য আর্য উত্তরাধিকার। বেদের আগেও যে ধর্ম ছিল। অনেক পরে কেল্ট জাতির druidরা যে ধর্ম পালন করত।
কালীধর্মের প্রকৃত ইতিহাস আজও লেখা হয়নি। কালী জগদকারণ। কালীনামে প্রাচীন প্রস্তর যুগ থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর আদি তন্ত্রধর্মের বিপুল রোমাঞ্চকর ইতিহাস নিহিত।
আর সেজন্য মা কালীর নামে বাঙালির সবকটি প্রাচীন নৃতাত্ত্বিক উপাদান একত্রিত হয়। দ্রাবিড় , অস্ট্রোএশিয়াটিক, মোঙ্গলয়েড এবং ব্রাত্য আর্য এই কালীর ধর্মে এক হয়েছে। মহাসমুদ্রে যেমন অনেক নদী আর সাগর এসে মেশে, বাঙালির আজকের কালীধর্ম সারা পৃথিবীর সুপ্রাচীন মাতৃধর্মের জীবন্ত উত্তরাধিকার বহন করে।
© তমাল দাশগুপ্ত Tamal Dasgupta
জয় মা কালী। জয় জয় মা।
তমাল দাশগুপ্ত ফেসবুক পেজ, সাত ফেব্রুয়ারি দুহাজার তেইশ