
একুশ শতকের তন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনার প্রথম শঙ্খধ্বনি আমরা করে দিয়েছি।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তন্ত্রবিদ্যা সম্পর্কে সাত সপ্তাহের সার্টিফিকেট কোর্স দেওয়া হয়। অবাক হচ্ছেন? বিলেত যেতে হবে না, সেই কোর্স অনলাইনেই করা যায়। ভারতীয় মুদ্রায় ষোল হাজার টাকার কিছু বেশি কোর্স ফিজ নিচ্ছেন ওঁরা । আমি নিজেই এনরোল করেছি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু স্টাডিজ বিভাগে তন্ত্রবিদ্যা সহ আরও অনেক কোর্স আছে, জানতে আগ্রহী হলে OCHS (Oxford Centre for Hindu Studies) লিখে গুগল করুন।
হ্যাঁ, ভবিষ্যতে বাঙালির নিজস্ব কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের তন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনার প্রথম পদক্ষেপ ছিল এটাই। পঞ্চান্ন জন বিক্রমশীল এই কাজের জন্য অনুদান পাঠিয়েছেন, কয়েকজন একশ টাকার বেশি পাঠিয়েছেন, মোট সাত হাজার টাকা উঠেছে। কোর্স ফিজের বাকি টাকাটা আমি নিজেই দিয়ে দিয়েছি। একুশ শতকের বিক্রমশীলদের সবাইকে করজোড়ে নমস্কার।
পশ্চিমী দুনিয়ায় তন্ত্র এবং মাতৃকা উপাসনা নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ। অনেকগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ে তন্ত্রবিদ্যা সম্পর্কে চর্চার বিভাগ আছে। ভারতে বা বাংলায় যা নেই, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দালাল-বিশ্বমানব-আগাছা অধ্যুষিত বলে। বাঙালির স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোথাও বাঙালির প্রাণের মা কালীকে নিয়ে চর্চা হয় না, মা তারাকে নিয়ে চর্চা হয়না, আমাদের জাতীয় জীবনের কেন্দ্রে থাকা তন্ত্রধর্ম সম্পর্কে চেতনা তৈরি করার কোনও সুযোগ থাকে না, বাঙালির ইতিহাস তো বাঙালির স্কুল কলেজেই পড়ানো হয় না। অবস্থা এত জঘন্য যে তন্ত্র বললে সাধারণ লোকে বোঝে ব্ল্যাক ম্যাজিক আর ভূতপ্রেত। আমরা এই অবস্থাটা পাল্টাব।
আন্তর্জাতিক মানের সিলেবাস তৈরি করে তন্ত্র এবং মাতৃকাধর্ম বিষয়ক সার্টিফিকেট কোর্স আমরা এই বছর পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু করব, জার্নাল অভ বেঙ্গলি স্টাডিজ, সপ্তডিঙা পত্রিকা এবং সপ্তডিঙা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে কোর্সটি করানো হবে। শেকড়বিচ্ছিন্ন, আত্মবিস্মৃত, স্রোতের শ্যাওলা, দালাল অধ্যুষিত, আত্মঘাতী বাঙালিকে তার মাতৃকা উপাসনার কেন্দ্রে পুনঃসংস্থাপিত করবই।
তন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস এবং নিজস্ব পুঁজি প্রয়োজন। সে একদিনের কাজ নয়, একজনের কাজ নয়। সেজন্য এক দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ করতে হবে। সে যুদ্ধের প্রথম শঙ্খধ্বনি আমরা করে দিয়েছি।
অনেকেই জানেন আমি দিল্লিতে থাকি। এই সপ্তাহান্তে আমি পশ্চিমবঙ্গে যাব, আগামী রবিবার বাইশ তারিখ কলকাতায় কালীক্ষেত্র আন্দোলনের আলোচনাসভায় অংশ নেব। সেখানে আপনিও থাকতে পারেন। যোগাযোগ করুন আমার নম্বরে: 097174 68046
আসুন, জয় মা কালী জয়ধ্বনি দিই সবাই। এত জোরে মায়ের নাম নিন , যাতে গেরুয়া-ডান বা সবুজ-সেকুলার, হালাল-লাল-বাম বা বিশ্বমানব-রামধনু-রংধনু দালালরা ভয়ে পিছু হটে যায়। জয় মা, জয় জয় মা।
তমাল দাশগুপ্ত Tamal Dasgupta
ছবিতে দেখছেন মা আগমেশ্বরী কালী।
সবেমাত্র প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বহু পথ চলা বাকি। কোর্স ডিজাইন করতে, ওয়েবসাইট তৈরি করতে এবং স্টাডি মেটেরিয়াল প্রিন্ট করতে আরো অনেকটা খরচ হবে। মায়ের সন্তানরা এগিয়ে আসুন। যাঁরা একশ টাকা অনুদান পাঠাতে চান, তাঁদের জন্য ডিটেলস রইল। 7699750212 নম্বরে ফোনপে গুগলপে পেটিএম করুন। ব্যাংক ট্রান্সফার করতে চাইলে
Rituparna Koley
Account Number 33054363900
IFSC
SBIN0001865
ইউপিআই আইডি এবং কিউ আর কোড রইল কমেন্ট বক্সে।

তমাল দাশগুপ্ত ফেসবুক পেজ, ষোল জানুয়ারি দুহাজার তেইশ
সংযোজন
★ এখানে একাধিক বিষয় আছে। প্রথমত তন্ত্রবিদ্যা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে চর্চার বিষয় সেটাই আমাদের বিশ্বমানবরা মানতে চায় না, তালগাছ থেকে পড়ে। তোমার পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেই, ভারত ও পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস বিভাগগুলোর ইতিহাস চর্চার পাতিহাস দশা সম্পর্কে জ্ঞান নেই, এজন্য তুমি অক্সফোর্ড থেকে শিখতে হবে বলে হা হুতাশ করছ। বাঙালির বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন নেই সেই নিয়ে হা হুতাশ কর, কাজে দেবে।
দ্বিতীয়ত, ঋতু একটি রিপ্লাই কমেন্টে বলে দিয়েছে গঙ্গারিডাই শিখতে হয় গ্রীক আর ল্যাটিন লেখকদের থেকে। কিন্তু এও বাহ্য। ইউরোপ তো মধ্যযুগের শেষে নিজেদের প্রাচীন গ্রীক দার্শনিকদের পুনরুদ্ধার করেছিল আরব থেকে। ইউরোপেই হারিয়ে গেছিলেন তাঁরা। এ তো মানব জাতির ইতিহাসে বারবার হয়েছে। বাঙালির মধ্যে গত একশ বছর ধরে বিশ্বমানবদের দাপাদাপি চলছে।এমন সব প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে, সে রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতী হোক বা বিবেকানন্দের রাকৃমি, সবাই বাঙালির তন্ত্রাশ্রয়ী শেকড় থেকে বাঙালিকে বিচ্যুত করে গেছে। এমন অবস্থায় বিদেশ থেকে শেখার কথায় চোখ কপালে তোলার কিছু নেই। বিশেষ করে আমাদের তন্ত্র সম্পর্কে বিদেশে আগ্রহ আছে, এ তো গর্বের কথা। তন্ত্রের ইতিহাসের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ আমরা পশ্চিম থেকে শিখব অবশ্যই। আমার আদর্শ বঙ্কিম, এবং পশ্চিম থেকে শেখার কথা তিনিই বলে গেছিলেন।
অনেকে বুঝতে পারেন নি, ব্যাপারটা এমন নয়। এটা ফেসবুক। আমার পেজের পাঠক সংখ্যা এক মাসে আড়াই লাখ থেকে পাঁচ লাখ। কালকে আমি যদি কালীলোক প্রাপ্ত হই এঁদের ভেতর থেকে পাঁচটি মানুষও সম্ভবত শবানুগমন করতে আসবেন না। কিন্তু তাতে এঁদের কালীভক্তি বা মাতৃকা উপাসনা ব্যর্থ হয় না। অস্যার্থ এটা অনলাইন মিডিয়াম। এখানে মানুষের কমিটমেন্ট ওইভাবে মাপা যায় না। গ্রাউন্ডে নেমে কাজ করার আলাদা পদ্ধতি আছে, ফেসবুকের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট ধারণা থাকা উচিত। দান বড় বিষম বস্তু, দান করা সহজ নয়। যাঁরা দিতে পারেননি, এতদ্বারা তাঁদের মাতৃভক্তি অথবা বোধশক্তি অথবা আমার বুঝিয়ে বলার ক্ষমতা ক্ষুণ্ণ হয় না।
শুধু অনলাইনের সীমাবদ্ধতাও নয়। নৌকোয় সবাই পার হয়, সবাই পারানি দেয় না, সবাই হাল ধরে না। ছেচল্লিশ সালে সবাই গোপাল পাঁঠা হয়নি। সবাইকে হতে হয় না, কেউ কেউ হয়। তাতেই মহাকালের কাজ চলে যায়।
জয় মা কালী।