
কালীনাম বীজ।
কালীনাম স্বয়ং মহাবীজ। সেই কালীনামবীজমন্ত্রের ব্যাখ্যা মনোরম ও সুন্দর: কালী জগদকারণ, কালী পৃথ্বীময়ী, কালী প্রফুল্ল আনন্দময়ী।
ব্রহ্মানন্দ রচিত শাক্তানন্দ তরঙ্গিণী, নবমোল্লাস থেকে পাই:
সমস্ত দেবদেবীর সমস্ত মূর্তি কালিকার ক-বর্ণ, ক-কার থেকে উৎপন্ন। মা কালীর ক-তত্ত্বে সৃষ্টি/ব্রহ্মা, স্থিতি/বিষ্ণু, প্রলয়/শিব সবই নিহিত। ক থেকে জগৎ উৎপন্ন হয়েছে। সেজন্যই আমাদের তন্ত্রাশ্রয়ী মাতৃকাবর্ণমালায় প্রথম বর্ণ ক।
ক থেকে কামবর্গ, অর্থাৎ কাম্য বস্তুর প্রাপ্তি, এবং ক থেকে কৈবল্য অর্থাৎ মোক্ষবর্গ। অর্থ ও ধর্ম বর্গের উদ্দেশ্যও তাই ক-কারে সুপ্ত।
ক-কার থেকে কাম্যফলপ্রদা মা কালীর কৈবল্যপদ প্রাপ্তি ঘটে। অর্থাৎ শাক্তধর্মে ভুক্তি ও মুক্তি উভয়েই একত্রে ঘটে। তাঁর পাদদ্বয়ে কৈবল্য এবং তিনিই কাম্যফল প্রদান করেন, তাই তাঁকে কামিনী বলা হয়। বামা তাঁর কামিনী নামের সমার্থক। কামিনী কৃষ্ণবর্ণা, এবং সেই সঙ্গে বিভিন্নবর্ণা। যেহেতু তাঁর থেকে জগৎ উৎপন্ন, তাই কামিনী নানারূপা।
কালিকার বীজ এই ক-কার থেকে পৃথ্বীবীজ ল-কার উৎপন্ন হয়, যাতে বামাক্ষী (দীর্ঘ ঈ) সংযুক্ত করলে কালীবীজ পাই। বিন্দু ও অর্ধচন্দ্র (অর্থাৎ চন্দ্রবিন্দু) দ্বারা সংযুক্ত হয়ে কালীবীজ প্রফুল্ল হয়।
ল-কার হলেন রত্নপ্রসবিনী পৃথিবী।
প্রসন্নবদনা, হাস্যমুখী রত্নবিভূষিতা – এইভাবে কা-কার সংযুক্ত প্রফুল্ল বীজমন্ত্রকে চিত্তে আবাহন করতে হবে (কাঁলী)।
আর কোনও দেবতার নামটি স্বয়ং বীজ নয়। কালীনাম সবার জন্য অবারিত, এবং কালীনাম জপে বীজমন্ত্রের শক্তি আছে।
জয় মা কালী। জয় জয় মা।
© তমাল দাশগুপ্ত Tamal Dasgupta
মায়ের ছবি ফেসবুক থেকে।
তমাল দাশগুপ্ত ফেসবুক পেজ, এগারো জানুয়ারি দুহাজার তেইশ