
জয়দুর্গা।
★ মুণ্ডমালাতন্ত্রে বলা হয়েছে: নহি দুর্গাসমা পূজা নহি দুর্গাসমং ফলং। নহি দুর্গাসমা জ্ঞানং নহি দুর্গাসমা তপঃ। অর্থাৎ দুর্গাপুজোর সমতুল্য কোনও পূজা নেই, দুর্গাপুজোর মত ফলপ্রসূ আর কোনও পূজা নেই, দুর্গাতত্ত্বের সমান জ্ঞান আর নেই, দুর্গাসাধনার মত তপোবল আর নেই।
★ বাঙালির শেকড়ে আছেন মা দুর্গা। দুর্গাপুজোর ইতিহাস উপমহাদেশে অতি প্রাচীন, হরপ্পা সভ্যতা থেকে চন্দ্রকেতুগড় সর্বত্র মা দুর্গার উপাসনার আদিরূপ প্ৰচলিত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
★ মহাভারতের আদি রূপ ছিল জয়কাব্য। মহাভারতে দুটি দুর্গাস্তব আছে। অর্থশাস্ত্রে দেখা যাচ্ছে অপরাজিতা পূজিত হচ্ছেন সেই খ্রিষ্টপূর্ব যুগের প্রাচীন ভারতে। মা দুর্গারই আরেক নাম অপরাজিতা। এছাড়া দুর্গা পূজিত হচ্ছেন দুর্গারক্ষার জন্য, পুরাণে দেখা যায়।
★ অর্থাৎ দুর্গা মূলত যোদ্ধামাতৃকা। এবং তিনিই জয়দাত্রীরূপে জয়দুর্গা। জয়দুর্গা হলেন মা দুর্গারই এক নির্দিষ্ট তন্ত্রধর্মী রূপ। এই রূপের ওপরে মা কালীর কিছুটা প্রভাব আছে। জয়দুর্গা চতুর্ভুজা এবং তিনি ঘননীলমেঘবর্ণা। জয়দুর্গা মায়ের ধ্যানমন্ত্র এবং মূর্তিরূপ এইভাবে বর্ণিত হয়েছে আগমবাগীশ কর্তৃক তন্ত্রসার গ্রন্থে।
★ মা জয়দুর্গার কালাভ্র আভা, অর্থাৎ নীল মেঘের মত রঙ।
★ মায়ের দৃষ্টি শত্রুদের ভয় উৎপাদন করছে।
★ মা জয়দুর্গা ত্রিনয়না। মায়ের কপালে অর্ধচন্দ্র তিলক।
★ জয়দুর্গা হলেন চতুর্ভুজা। শঙ্খ চক্র খড়্গ ত্রিশূল ধারিণী।
★ মা জয়দুর্গা সিংহবাহিনী।
★ মায়ের অসীম তেজে ত্রিভুবন পরিপূর্ণ।
★ জয়দুর্গা দেবগণকর্তৃক পরিবেষ্টিত এবং পরিষেবিত।
★ মা সিদ্ধিপ্রদা এবং ভক্ত সন্তানদের কাম্য বস্তু প্রদান করেন: মা জয়দুর্গা হলেন সিদ্ধিকামী।
★মা জয়দুর্গার মন্ত্র দশাক্ষর: ওঁ দুর্গে দুর্গে রক্ষণি স্বাহা। জয়দুর্গা উপাসনায় অঙ্গ ন্যাস এবং কবচ নির্মিত হয়। মাকে হৃদয়ে এবং নিজ শরীরে আবাহন করা হয়।
জয় মা জয়দুর্গা। জয় জয় মা।
© তমাল দাশগুপ্ত Tamal Dasgupta
মায়ের ছবি পিন্টারেস্ট থেকে।
তমাল দাশগুপ্ত ফেসবুক পেজ, সাতাশ ডিসেম্বর দুহাজার বাইশ