
মা কালীর মন্ত্র, সর্বজনহিতায়।
কালী মন্ত্র যে কেউ গ্রহণ ও উচ্চারণ করতে পারে, যে কোনও সময় পারে। আগমবাগীশের তন্ত্রসারে উদ্ধৃত ভৈরব তন্ত্র অনুযায়ী:
★ কালীমন্ত্রের জ্ঞান হওয়া মাত্র মানুষ জীবন্মুক্ত হয়। অর্থাৎ মোক্ষপ্রাপ্তি ঘটে।
★ কালীমন্ত্রগ্রহণে মন্ত্রশুদ্ধিবিবেচনা নেই। কালীমন্ত্রে কোনও অরিমিত্রাদিদোষ বিচার করতে হয় না।
★ এই কালীমন্ত্রজপে ও মায়ের আরাধনায় কোনও সময় অসময় নেই।
★অর্থব্যয় ও কায়ক্লেশ ব্যতিরেকে কালীমন্ত্র গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন ভৈরবতন্ত্র, অর্থাৎ এ মন্ত্রের জন্য কোনও দক্ষিণা দিতে হয় না, এবং কোনও জটিল উপচার নেই।
সর্বজনহিতে কালীমন্ত্র প্রচার।
★★■★★
ক্রীঁ ক্রীঁ ক্রীঁ হূঁ হূঁ হ্রীঁ হ্রীঁ দক্ষিণ কালিকে ক্রীঁ ক্রীঁ ক্রীঁ হূঁ হূঁ হ্রীঁ হ্রীঁ স্বাহা।
★★■★★
★ সর্বমন্ত্রের প্রধান এই কালীমন্ত্র।
★ এই মন্ত্রে জলরূপী ক-কার মোক্ষ প্রদান করে।
★ অগ্নিরূপী রেফ সর্বতেজ প্রদান করে।
★ ক্রীঁ বীজত্রয় সৃষ্টি স্থিতি প্রলয়।
★ হূঁ বীজদ্বয় শব্দজ্ঞান প্রদান করে।
★ হ্রীঁ বীজদ্বয় সৃষ্টিস্থিত্যন্তকারী।
★ দক্ষিণ কালিকে সম্বোধনপদে মা কালীর সান্নিধ্য ঘটে।
★ স্বাহা মন্ত্র জগতের মাতাস্বরূপ এবং সর্বপাপবিনাশিনী।
© তমাল দাশগুপ্ত Tamal Dasgupta
জয় মা কালী। জয় জয় মা।
মায়ের ছবি ইন্টারনেট থেকে।
সংযোজন
১.
প্রচুর বাধা আছে, সেসব বাধা অতিক্রম করতে হবে আপনাকে। একপাল ভণ্ড গুরু ও তাদের একপাল গণ্ড শিষ্য এসে ভয় দেখাবে, সেই বাধা অবশ্যই আছে। তন্ত্রে সবই গুহ্য আর গোপন, এই বলে বিকট রকম ভয় দেখাবে একদল, সেই সব বাধা আছে। রামের নাম আর কৃষ্ণের নাম আর শিবের নাম হই হই করে হাটে বাজারে পলিটিক্সের মাঠে আর আঘাটার ঘাটে সর্বত্র নেওয়া গেলেও কালীর নাম নিতে গেলে একজন বিশেষ গুরুর অনুমতি নিয়ে হিড়িম্বা অমাবস্যায় সুগভীর রাতে ফেৎকারিণী সাধনা করতে করতে শ্মশানের পাশে ডোবায় হাঁটুজল অবধি ডুবিয়ে মুখ খিঁচিয়ে দাঁত কিড়মিড় করে একশ আট লক্ষ বার গুরুদত্ত মন্ত্র জপে তবে এই কালীর নাম করার অধিকার হয়, এইসব বলবে আর কি। এগুলো বাধা নয়? তারপর একদল ভ্রান্ত গুরু আছে তারা মাতৃসাধনাকে মাতৃগমন বানিয়ে ফেলেছে প্রায়। সবাই বিনা বাধায় মায়ের নাম নিলে তাদের এক্সক্লুসিভ পতিত্বের পাতন ঘটে যায় অতএব তারাও বেজায় চিল্লায় এবং বাধা দেয়। এইসব বাধা তো আছেই। মায়ের সন্তানকে এইসব বাধা অতিক্রম তো করতেই হবে।
তবে এগুলো কোনও বাধাই নয়। কালীমন্ত্র জপতে শাস্ত্রের বাধা আছে কি না, এটাই জানতে চাইছেন তো? নেই। ভৈরব তন্ত্রের নির্দেশ উদ্ধৃত করেছি এই পোস্টেই, যে ভৈরব তন্ত্র থেকে ওই অংশটি আগমবাগীশ নিজেই তন্ত্রসারে দিয়েছেন।
২.
তন্ত্রে তো বর্ণভেদ নেই, লিঙ্গবৈষম্য নেই। তাই স্ত্রীলোক আর শূদ্রকে মায়ের মন্ত্র থেকে দূরে রাখবে কিকরে? বৈদিক গায়ত্রী অব্রাহ্মণ স্ত্রীলোক শূদ্র সবার জন্য নিষিদ্ধ হতে পারে, কিন্তু মায়ের মন্ত্র কিভাবে নিষেধ করবে? সেজন্যই ওরা ভয় দেখায়, সবই গুহ্য আর গোপন বলে মায়ের বীজমন্ত্র গ্রহণ ও জপে বাধা দেয়।
মাভৈ। নির্ভয়ে কালীমন্ত্র জপ করুন।
তমাল দাশগুপ্ত ফেসবুক পেজ, সাত ডিসেম্বর দুহাজার বাইশ