
মায়ের বাহন সিংহ আসলে বিষ্ণু স্বয়ং: শাক্ত বৈষ্ণব আপাত দ্বন্দ্ব নিরসনে শাস্ত্রীয় প্রমাণ।
সিংহবাহিনী মাতৃশক্তির উপাসনা নব্য প্রস্তর যুগ থেকে হচ্ছে এশিয়া জুড়ে, গত আট হাজার বছর ধরে। ভারতে কুষাণ যুগ থেকেই সিংহবাহিনী মূর্তির প্রচুর প্রত্ন প্রমাণ আছে, গুপ্তযুগ থেকে তো নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে। সিংহ বাহিনীর ইতিহাস নিয়ে আগে লিখেছি। আমাদের মা দুর্গা সিংহবাহিনী, এছাড়া কালীরও সিংহবাহিনী রূপ আছে, লক্ষ্মী এবং সরস্বতীরও সিংহবাহিনী রূপ হয়, জগদ্ধাত্রী তো অবশ্যই সিংহ বাহিনী। আজ আমরা জানব যে মায়ের বাহন এই সিংহ আসলে বিষ্ণুর রূপভেদ, বিষ্ণু স্বয়ং মায়ের বাহন। হ্যাঁ, এর স্বপক্ষে শাস্ত্রীয় প্রমাণ আছে।
বিষ্ণুর নরসিংহ অবতার সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি। বিষ্ণুর সিংহরূপ কাজেই আছে। কিন্তু মা দুর্গার বাহন সিংহও আসলে সিংহরূপী বিষ্ণু।
কালীবিলাসতন্ত্রে বলা হয়েছে মায়ের সিংহ বাহন আসলে হরি যিনি স্বয়ং বিষ্ণু।
কালিকাপুরাণে বলা হয়, মায়ের তিন বাহন হলেন ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর। প্রথমজন রক্তপদ্ম, শেষের জন শবরূপ ধারণ করে মায়ের বাহন হয়েছেন, আর বিষ্ণু স্বয়ং সিংহরূপে মায়ের বাহন।
দেবী পুরাণ অনুসারে বিষ্ণু স্বয়ং দেবী দুর্গার বাহন সিংহকে নির্মাণ করেছিলেন সর্বদেবের নির্যাস দিয়ে: এই সিংহের কেশরমূলে কেশব স্বয়ং ছিলেন, গ্রীবায় ছিলেন বিষ্ণু ও সিংহের দেহে সর্বদেবতার অধিষ্ঠান হয়েছিল।
© তমাল দাশগুপ্ত Tamal Dasgupta
জয় মা সিংহবাহিনী। জয় জয় মা।
পালযুগে নবম শতকে পালরাষ্ট্রের অন্তর্গত অধুনা উত্তর প্রদেশে উৎকীর্ণ চতুর্ভুজ সিংহবাহিনী, এই মাতৃমূর্তির বর্তমান অবস্থান মেট মিউজিয়াম।
তমাল দাশগুপ্ত ফেসবুক পেজ, একুশ নভেম্বর দুহাজার বাইশ