
গুহ্যকালী।
জরাসন্ধ পূজিত আদি গুহ্যকালী কেমন দেখতে ছিলেন, তা জানার অসম্ভব কৌতূহল কোনওদিনই মিটবে না, আকালিপুর বীরভূমে যে মাতৃমূর্তি দেখি, তা মধ্যযুগের শেষে নির্মিত মূর্তি। সেই গুহ্যকালী মা সম্পর্কে লিখেছি আগে পেজে, লিংক কমেন্টে। মগধ সম্রাট জরাসন্ধ পূজিত সেই আদি গুহ্যকালীকে দেখা আর সম্ভব নয়, তবে সেযুগে পাণ্ডু রাজার ঢিবিতে যে বলাকা মাতৃকা পাওয়া গেছে তাঁর সঙ্গে কিছু মিল কল্পনা করে নিই।
কিন্তু অষ্টম থেকে দশম শতকে পালযুগে পূর্ব ভারতে গুহ্যকালী অতীব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন, এই সময় থেকেই তাঁর উপাসনার ইতিহাস লিপিবদ্ধ। পালযুগে সম্রাট ধর্মপাল স্বয়ং যদিও তারার উপাসক ছিলেন, কিন্তু ধর্মপাল-মহাকাল কাল্ট এই সময়ে গুহ্যকালী কেন্দ্রিক হয়ে যায়, যার সাক্ষ্য দেয় মহাকাল সংহিতা। গুহ্যকালীর আট হাত, কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে চুয়ান্ন হাতও হতে পারে। এছাড়া সর্বদাই তাঁর দশ মুখ। কিন্তু চিত্তাকর্ষক বিষয় হল তাঁর মুখগুলি পিরামিডের মত উপর থেকে নিচে চারটি স্তরে বিন্যস্ত, অন্যান্য বহু-মুখী পৌরাণিক দৈব চরিত্রের মত সব মুখগুলি একটি রেখায় একই স্তরে পাশাপাশি নেই। গুহ্যকালীর দশটি আননের সবগুলি মানবীয় নয়, পশু পাখিও দ্রষ্টব্য।
জয় মা দশাননা কালী, জয় মা জরাসন্ধেশ্বরী কালী: জয় মা গুহ্যকালী।
© তমাল দাশগুপ্ত Tamal Dasgupta
দেখছেন নেপালে অঙ্কিত একটি গুহ্যকালী চিত্র। প্রসঙ্গত নেপালে যুদ্ধ করতে গিয়েই বৃদ্ধ বয়সে ধর্মপাল প্রয়াত হন বলে জানা যায়। এই গুহ্যকালী মূর্তিতে সেজন্যই বোধকরি মায়ের পদতলে স্বয়ং মহাকাল-ধর্মপাল ভৈরব।
জয় জয় মা।
বীরভূমে আকালিপুরের গুহ্যকালী
তমাল দাশগুপ্ত ফেসবুক পেজ, সাতাশ অক্টোবর দুহাজার বাইশ