
পালযুগে ও সেনযুগে দুর্গাপুজো হত। নথিবদ্ধ প্রমাণ রয়েছে।
মা দুর্গার শারদীয়া উপাসনা বহু প্রাচীন, মা কালীও সুপ্রাচীন, এঁরা হরপ্পা সভ্যতা থেকে অবিচ্ছিন্নভাবে পূজিত হচ্ছেন। কিন্তু বাঙালির মা দুর্গা ও মা কালীর বর্তমান অবয়বের মূর্তিরূপ ও মূর্তিতত্ত্ব পালযুগের সৃষ্টি।
সম্রাট মহীপাল ভবানী মন্দির স্থাপনা করেন, সাক্ষ্য দিচ্ছে পালযুগের নথি।
নয়পালও মা দুর্গার পূজা করেছেন, যদিও তিনি মূলত চর্চিকা উপাসক।
রামপালের সময় শরৎকালে উমা পূজায় মহা ধুমধাম হচ্ছে গৌড় নগরে, রামচরিত সাক্ষ্য দেয়।
এরপর সেনযুগে দশমহাবিদ্যা তত্ত্ব উত্থিত হয়। বল্লালের শাক্তখ্যাতি আছে, ঢাকেশ্বরী দুর্গা দ্রষ্টব্য।
সেনযুগ সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা আছে। সেনযুগ মূলত পালযুগেরই ধারাবাহিকতা ও উত্তরাধিকার বহন করে, এবং কয়েকটি ক্ষেত্রে সেনযুগ ছিল কোর্স কারেকশন। যেমন পালযুগের অন্তিমে কৈবর্ত বিদ্রোহ দমন-পরবর্তীকালে নিপীড়িত কৈবর্ত জাতি তাঁদের হৃত মর্যাদা ফিরে পান সেনযুগে।
সেনযুগে উড়িষ্যা ছিল গৌড় সাম্রাজ্যের অন্তর্গত, অন্যান্য অতীত যুগের মতই সেনযুগেও বিহার উড়িষ্যা কামরূপ নিয়ে বাঙালির সাম্রাজ্য ছিল। সেই সময় উড়িষ্যার একটি দুর্গামূর্তি। সময়কাল ত্রয়োদশ শতক। বর্তমান অবস্থান ব্রিটিশ মিউজিয়াম।
© তমাল দাশগুপ্ত
জয় জয় মা।
তমাল দাশগুপ্ত ফেসবুক পেজ, চব্বিশ আগস্ট দুহাজার বাইশ
সংযোজন
শ্রীশ্রীচণ্ডী ষষ্ঠ শতকের গ্রন্থ, তাতে দেবী শরৎকালে তাঁর পূজা হয় বলেছেন। এছাড়া আপনি সুকুমার সেন পড়ুন, শারদীয়া বোধন সম্পর্কে তাঁর গবেষণা পড়ুন। শারদীয়া উৎসবটিই অধিকতর প্রাচীন, ইতিহাসের সাক্ষ্য অনুযায়ী।
তিনশ বছর সম্ভবত আপনি পলাশীর যুদ্ধ থেকে পেয়েছেন। তার আগেও শারদীয়া দুর্গাপুজো হত, এই পোস্টেই উল্লেখ আছে যে পালযুগেও শারদীয়া দুর্গাপুজো ছিল। বস্তুত শারদীয়া দুর্গাপুজো হরপ্পা সভ্যতা থেকে চলে আসছে, এ নিয়ে অনেকবার লিখেছি।